শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

ধর্ষণে এসআই খাইরুলও জড়িত, ভয়ে নাম বলিনি’

ধর্ষণে এসআই খাইরুলও জড়িত, ভয়ে নাম বলিনি’

স্বদেশ ডেস্ক:

যশোরের শার্শা উপজেলায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুলকে ভালোভাবেই চেনেন বলে জানিয়েছেন ঘটনার শিকার গৃহবধূ। তবে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে খাইরুলকে সামনে এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভয়ে তার নাম বলেননি ওই গৃহবধূ।

গতকাল শুক্রবার শার্শার লক্ষণপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে বিএনপির নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরামের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।

ধর্ষণে এসআই খাইরুল জড়িত ছিলেন কি না, তা ডিএনএ টেস্ট করলেই জানা যাবে বলে দাবি করেন ওই গৃহবধূ। তিনি বলেন, ‘খায়রুলরে আমি শুধু চিনিনে, খুব ভালো করে চিনি। আমার স্বামীরে বিনা কারণে ধরে নিয়ে গেছে। আমার কাছ থেকে আট হাজার টাকা, চার-পাঁচ হাজার টাকা করে নিতিই থাকে। উনি পুলিশ, উনার সাথে আমি পারব না। তাই তার কথা আমি অস্বীকার করেছি।’

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘ধর্ষণে এসআই খাইরুলও জড়িত। তার সঙ্গে যারা ছিল, তারা এলাকার ভয়ঙ্কর লোক। ছাড়া পেলে তারা ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।’ তাই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি এখন শঙ্কিত বলেও জানান।

গত বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। ধর্ষণের ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফ ও কাদের নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এসআই খায়রুলকে মামলার আসামি করা হয়নি। শুধু তাকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ধর্ষণের ঘটনার দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই নারী জানান, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুলসহ চারজন তার বাড়িতে গিয়ে তাকে ডাকতে থাকেন। খাইরুলের সঙ্গে তার গ্রামের দুই ব্যক্তিকে দেখে তিনি দরজা খুলে দেন। খাইরুল তার স্বামীর জামিনের প্রস্তাব দিয়ে বিনিময়ে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় খাইরুল তার স্বামীর বিরুদ্ধে দেওয়া ফেনসিডিলের মামলাটি ‘হালকা করে দেবেন’ বলে তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।

ওই গৃহবধূ আরও জানান, এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে এসআই খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওই নারীকে ঘরে নিয়ে খায়রুল ও কামরুল মিলে তাকে ধর্ষণ করেন।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট এসআই খাইরুল তার স্বামীকে মাদকের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেন বলেও অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূ।

এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। দলটির নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা আজ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজখবর নেন এবং তাকে আইনগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ষণ মহামারি আকার ধারণ করেছে। সারা দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউ নিরাপদ নয়। ধর্ষণকাজে পুলিশও বাদ যাচ্ছে না।’

নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত না হলে কারও নিরাপত্তা থাকে না। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলীয়করণ করে তাদের সহযোগিতায় মধ্যরাতের ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমন অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে।’

তারেক রহমানের নির্দেশনায় তারা নারী ও শিশু রক্ষায় সারা দেশে কাজ করছেন বলে জানান নিপুণ রায়। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। যেখানেই নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হবেন, সেখানেই তারা ছুটে যাবেন, তাদের পাশে দাঁড়াবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877